পুরুষের সংজ্ঞা, পুরুষের প্রকারভেদ, উত্তম – প্রথম – মধ্যম পুরুষের সংজ্ঞা ও উদাহরণ এবং পুরুষের ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল ।
Table of Contents
সংস্কৃত পুরুষ
পুরুষের সংজ্ঞাঃ-
যাকে আশ্রয় করে ক্রিয়ার রূপ পরিবর্তিত হয়, তাকে পুরুষ বলে।
পুরুষের প্রকারভেদঃ-
পুরুষ তিন রকম –
- (১) উত্তম পুরুষ,
- (২) মধ্যম পুরুষ
- (৩) প্রথম পুরুষ।
(১)উত্তম পুরুষঃ-
বক্তার নিজেকে বোঝাবার জন্য যে সর্বনাম পদ ব্যবহার করা হয়, তাকে বলা হয় উত্তম পুরুষ।
উত্তম পুরুষের উদাহরণঃ-
অহম্, আবাম্, বয়ম্, মম, মাম্ প্রভৃতি উত্তম পুরুষের সর্বনাম।
সংস্কৃতে একমাত্র ‘অম্মদ্’ শব্দই উত্তম পুরুষ
(২) মধ্যম পুরুষঃ-
কারও সঙ্গে কথা বলার সময় যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, তাকে বোঝাতে যে সর্বনাম পদ ব্যবহার করা হয় তাকে বলে মধ্যম পুরুষ।
মধ্যম পুরুষের উদাহরণঃ-
ত্বম্, যুবাম্, যূয়ম্, তব, তাম্ প্রভৃতি পদগুলি মধ্যম পুরুষ। সংস্কৃতে একমাত্র ‘যুষ্মদ’ শব্দজাত পদই মধ্যম পুরুষ হয়।
‘ভবৎ’ শব্দদ্বারা আপনি অর্থ বোঝালেও তা প্রথম পুরুষ। অর্থাৎ ‘আপনি’ বাংলায় মধ্যমপুরুষ হলেও সংস্কৃতে ‘ভবৎ’ প্রথম পুরুষ।
(৩) প্রথম পুরুষঃ-
কাছে বা দূরে অবস্থিত যার সম্বন্ধে বলা হয়, তাকে প্রথম পুরুষ বলে।
প্রথম পুরুষের উদাহরণঃ-
সঃ, সা, অসৌ, ফলম্, নরঃ প্রভৃতি। প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতে ‘অস্মদ্’ ও ‘যুগ্মদ’ শব্দ দুটি বাদে যত শব্দ হতে পারে সবই প্রথম পুরুষ ।
পুরুষের ব্যবহারঃ-
(১) ‘অম্মদ’ শব্দ উত্তম পুরুষ।
কর্তৃবাচ্যে বাক্যের কর্তা উত্তম পুরুষের হলে তিঙন্ত ক্রিয়াপদও উত্তমপুরুষ হয়। যেমন— আমি বলি = অহম্ বদামি।
(২) ‘যুগ্ম’ শব্দ মধ্যম পুরুষ।
কর্তৃবাচ্যে বাক্যের কর্তা মধ্যম পুরুষের হলে তিঙন্ত ক্রিয়াপদও মধ্যম পুরুষের হয়। যেমন— তুমি বল = ত্বম্ বদসি।
(৩) কর্তৃবাচ্যে বাক্যের কর্তা প্রথম পুরুষের হলে তিঙন্ত ক্রিয়াপদও প্রথম পুরুষের হয়।
যেমন— সে যায় = সঃ গচ্ছতি। আপনি বলেন = ভবান্ বদতি।
(৪) কর্মবাচ্যে
- (ক) কর্ম উত্তম পুরুষের হলে তিঙন্ত ক্রিয়া উত্তম পুরুষের হয়।
- (খ) কর্ম মধ্যম পুরুষের হলে তিঙক্ত ক্রিয়াপদ মধ্যম পুরুষের হয়।
- (গ) কর্ম প্রথম পুরুষের হলে তিভত্ত ক্রিয়াপদও প্রথমপুরুষ হয়।
(৫) ভাববাচ্যে কর্তা উত্তমপুরুষ, মধ্যমপুরুষ বা প্রথমপুরুষ যাই হোক না কেন— তিঙন্ত ক্রিয়াপদ সর্বদাই প্রথম পুরুষের একবচন হয়।
(৬) ‘ভবৎ’ শব্দের অর্থ ‘আপনি’ (You ) হলেও এটি প্রথম পুরুষ।
তাই কর্তৃবাচ্যে ‘ভবৎ’ শব্দজাত পদ কর্তা হলে তিঙন্ত ক্রিয়াপদ প্রথম পুরুষের হয়।
(৭) কোনও বাক্যের কর্তায়
- (ক) উত্তম, মধ্যম ও প্রথমপুরুষ ‘চ’ দ্বারা যুক্ত থাকলে, কিংবা
- (খ) উত্তম ও মধ্যমপুরুষ ‘চ’ দ্বারা যুক্ত থাকলে, কিংবা
- (গ) উত্তম ও প্রথমপুরুষ ‘চ’ দ্বারা যুক্ত থাকলে— তিঙত্ত ক্রিয়াপদটি উত্তম পুরুষের হয়।
- যেমন— সঃ ত্বম্ অহম্ চ পঠামঃ, সঃ অহম্ চ পঠাবঃ, ত্বম্ অহম্ চ পঠাবঃ।
(৮) কোনও বাক্যের কর্তায় মধ্যম ও প্রথম পুরুষ ‘চ’ দ্বারা যুক্ত থাকলে তিঙন্ত ক্রিয়াপদটি মধ্যম পুরুষের হয়। যেমন— সঃ ত্বম্ চ পঠথঃ।
(৯) বাক্যের কর্তায় উত্তম, মধ্যম ও প্রথম পুরুষের পদ ‘অথবা’-বোধক অব্যয় দ্বারা বিযুক্ত থাকলে, যে পদটি শেষে থাকে তিগুপ্ত ক্রিয়াপদ সেই শেষে অবস্থিত পদটির পুরুষ ও বচন অনুসারে হয়।
যেমন— ত্বম্ অহম্ বা বদিয্যামি, অহম্ ত্বম্ বা বদিষাসি, সঃ অহম্ ত্বম বা বদিষ্যসি, সঃ বয়ম্ বা গমিষ্যামঃ প্রভৃতি।
(১০) উদ্দেশ্য ও বিধেয় ভিন্ন ভিন্ন পুরুষের হলে তিউত্ত ক্রিয়াপদের পুরুষ উদ্দেশ্য অনুসারে হয়।
যেমন— ত্বম্ মম মিত্রম্ ভবসি, অহম্ তব সখা ভবামি প্রভৃতি।