সংস্কৃত কর্ম কারক ও দ্বিতীয়া বিভক্তির সকল নিয়ম সহজ-সরল এবং আধুনিক পদ্ধতিতে উদাহরণ সহযোগে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল ।
Table of Contents
কর্ম কারক – দ্বিতীয়া বিভক্তি
কর্তা যা করে তাই কর্ম । কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
সংস্কৃত কর্ম কারক ও দ্বিতীয়া বিভক্তির নিয়মগুলি সহজভাবে বাংলায় তুলে ধরা হল । এগুলি তোমরা ভালোভাবে তৈরী করলে যে কোনো কারক-বিভক্তি অনায়াসেই করতে পারবে।
ঈপ্সিততম কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
কর্তা ক্রিয়াপদের মাধ্যমে যাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পেতে ইচ্ছা করে ঈপ্সিততম কর্মে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – বালকঃ পয়সা অন্নং ভুঙ্ক্তে ।
বাক্যটির অর্থ হল ছেলেটি দুধ দিয়ে ভাত খাচ্ছে । কর্তা বালক ক্রিয়াপদের মাধ্যমে ভাতকে বেশি পরিমাণে পেতে ইচ্ছা করছে । তাই ‘অন্নম্’ পদটিতে ঈপ্সিততম কর্মে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়েছে ।
অনীপ্সিত কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
ঈপ্সিততমের মতো অনীপ্সিত বিষয় ক্রিয়ার সাথে যুক্ত হলে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – বালকঃ অন্নং ভুঞ্জানো বিষং ভুঙ্কতে
উপ, অনু, অধি, আ পূর্বক বস্ ধাতুর আধারে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
উপ, অনু, অধি, আ পূর্বক বস্ ধাতুর আধার (আশ্রয় স্থল) কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – মুনিঃ বনম্ উপবসতি ।
অতিরিক্ত উদাহরণ – সাধুঃ বনম্ অনুবসতি । শিবঃ কৈলাসম্ আবসতি ।
অধি পূর্বক শী, স্থা, আস্ ধাতুর আধারে কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
অধি পূর্বক শী, স্থা, আস্ ধাতুর আধার (আশ্রয় স্থল) কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – শিশুঃ শয্যাম্ অধিশেতে ।
অতিরিক্ত উদাহরণ – নরঃ গ্রামম্ অধ্যাস্তে ।
অভি পূর্বক ও নী পূর্বক বিশ্ ধাতুর আধারে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
অভি পূর্বক ও নী পূর্বক বিশ্ ধাতুর আধার (আশ্রয় স্থল) কর্মকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – সাধুঃ সন্মার্গম্ অভিনিবিশতে ।
ক্রধ্, দ্রুহ্ ধাতু উপসর্গ যোগে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি
ক্রধ্ ও দ্রুহ্ ধাতু উপসর্গ যুক্ত হলে যার প্রতি রাগ ইত্যাদি প্রকাশ পায়, সে কর্মকারকে দ্বিতীয়া হয় ।
উদাহরণ – প্রভুঃ ভৃত্যং প্রক্রধ্যতি ।
গৌণকর্মে দ্বিতীয়া বিভক্তি
অপাদান, সম্প্রদান, করণ ও অধিকরণ কারক বক্তার ইচ্ছার অভাবে কখনো কখনো কর্ম কারক হয় । প্রধান কর্ম থাকেই, তার সঙ্গে যুক্ত অন্য কারক কর্ম হয়ে যায় । যে কর্মটি প্রধান তার নাম মুখ্য কর্ম বা কথিত কর্ম । অন্য কারকের স্থলে যে কর্মটি হল তার নাম অপ্রধান কর্ম বা কথিত কর্ম বা গৌণ কর্ম ।
উদাহরণ – মাতা তণ্ডুলান্ অন্নং পচতি ।
দ্বিতীয়া বিভক্তি
ব্যাপ্তি অর্থে দ্বিতীয়া বিভক্তি
অত্যন্ত সংযোগ অর্থাৎ ব্যাপ্তি বোঝালে সময়ের পরিমাণবাচক (দিবস, সপ্তাহ, মাস, বৎসর ইত্যাদি) ও পথের পরিমাণবাচক (ক্রোশ ইত্যাদি) শব্দে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – ছাত্রঃ মাসং ব্যাকরণম্ পঠতি ।
ক্রিয়া বিশেষণে দ্বিতীয়া বিভক্তি
ক্রিয়ার বিশেষণে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় । ক্রিয়ার বিশেষণ সর্বদা ক্লীবলিঙ্গ দ্বিতীয়া বিভক্তির একবচন হয় ।
কর্মপ্রবচনীয় যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি
যদি কোনোও উপসর্গ ধাতুর পূর্বে না বসে বাক্যে পৃথক্ শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে কর্মপ্রবচনীয় বলে । আর এই কর্মপ্রবচনীয় যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – জপম্ অনু প্রাবর্ষৎ ।
অভিতঃ, পরিতঃ, সময়া, নিকষা, হা, প্রতি, অন্তরা, অন্তরেণ প্রভৃতি অব্যয় যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি
অভিতঃ (নিকটে), পরিতঃ(চারিদিকে), সময়া (নিকটে), নিকষা (নিকটে), হা (হায়), প্রতি (দিকে), অন্তরা (মাঝখানে), অন্তরেণ (ছাড়া), সর্বতঃ (সব দিকে), ধিক্ (ধিক্কার), পৃথক্ (আলাদা), উভয়তঃ (উভয় দিকে), যাবৎ (পর্যন্ত), ঋতে (ছাড়া) প্রভৃতি অব্যয় যোগে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – গ্রামং নিকষা নদী ।
কর্মকারক ও দ্বিতীয়া বিভক্তি থেকে অতিরিক্ত নিয়ম
দিব্ ধাতুর প্রয়োগে বিকল্পে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া
দিব্ ধাতুর প্রয়োগে করণ কারক – এর স্থলে বিকল্পে কর্ম কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – রাজা অক্ষান্ দীব্যতি ।
অনাহার অর্থে উপ পূর্বক বস্ ধাতুর প্রয়োগে অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি
অনাহার বা উপবাস বোঝালে উপ পূর্বক বস্ ধাতুর অধিকরণ কারকের স্থানে কর্মকারক হয় না, অধিকরণ কারক হয় এবং তাতে সপ্তমী বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – মুনিঃ বনে উপবসতি ।
ক্রধ্, দ্রুহ্ ধাতুর প্রয়োগে সম্প্রদান কারকে চতুর্থী বিভক্তি
উপসর্গ যুক্ত না হলে ক্রধ্, দ্রুহ্ ধাতুর প্রয়োগে যার প্রতি রাগ ইত্যাদি প্রকাশ পায়, সে সম্প্রদান কারকে চতুর্থী বিভক্তি হয় ।
উদাহরণ – প্রভুঃ ভৃত্যায় ক্রুধ্যতি ।
আপনি যদি কর্ম কারক ছাড়া অন্য কারক বিভক্তি গুলি দেখতে চান তা হলে নিচের লিংক গুলিতে ক্লিক করুণ
- কর্তৃ কারক ও প্রথমা বিভক্তি
- করণ কারক ও তৃতীয়া বিভক্তি
- সম্প্রদান কারক ও চতুর্থী বিভক্তি
- অপাদান কারক ও পঞ্চমী বিভক্তি
- অধিকরণ কারক ও সপ্তমী বিভক্তি
- ষষ্ঠী বিভক্তি