একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত গদ্যাংশ দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশ থেকে মগধরাজ ও মালবরাজের যুদ্ধের বর্ণনা করা হল।
Table of Contents
মগধরাজ ও মালবরাজের যুদ্ধের বর্ণনা
প্রশ্ন:- পাঠ্যাংশ অবলম্বনে মগধরাজ ও মালবরাজের যুদ্ধের বর্ণনা দাও।
ভূমিকা:- আচার্য দন্ডী প্রণীত “দশকুমারচরিতম্” নামক আখ্যায়িকা শ্রেণির গদ্যকাব্যের পূর্বপীঠিকার প্রথম উচ্ছ্বাসে মহাপ্রতাপশালী মগধরাজ রাজহংসের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ মালবরাজ দর্পাভিমানী মানসারের তুমুল যুদ্ধের বর্ণনা পাই। যুদ্ধের কারণ মুগধদেশের প্রতিবেশী রাজা মালবদেশ। সেখানে রাজত্ব করতেন রাজা মানসার। তিনি ছিলেন উদ্ধৃত, অহংকারী ও
প্রতিহিংসা পরায়ণ
মালবরাজের উদ্ধত্যে ক্রুদ্ধ হন সূর্যের মতো প্রতাপশালী রাজা রাজহংস। মানসারের দর্পচূর্ণ করে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য মগধরাজ তার চতুরঙ্গ সেনা প্রস্তুত করে যুদ্ধযাত্রা করলেন।
মগধরাজ ও মালবরাজের যুদ্ধের বর্ণনা
একসময় মগধরাজ রাজহংস অস্ত্রনৈপুণ্যে অগণিত রাজাদের পরাজিত করেছিলেন। তিনি তীব্র রোষে মালবরাজের বিরুদ্ধে চতুরঙ্গ সেনাসহ যুদ্ধযাত্রা করেন। এই চতুরতা সেনা রাজহংসের মতো মহান রাজাদের থাকত, যুদ্ধের সম্মুখভাগে থাকত পদাতিক বাহিনী, তারপরে অশ্বারোহী বাহিনী, হস্তীবাহিনী এবং শেষে রথারোহী বাহিনী। এই চারটি সাজানো সৈন্যবাহিনীকে একসঙ্গে চতুরতা সেনা বলে। মালবরাজ মানসারও উৎসাহী হয়ে হস্তী নিয়ে স্বয়ং যুদ্ধে এগিয়ে গেলেন। উভয়ের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হল। চতুরঙ্গ সেনার ভেরির শব্দে সমুদ্রের শব্দ তিরোহিত হয়ে যায়। চতুরঙ্গ সেনা প্রবল কর্ণভেদী শব্দ করতে থাকে। অতর্কিত ভয়ংকর শব্দ শুনে দিগ্গজেরা যেন ভয়ে কেঁপে ওঠে। সৈন্যদের পদভারে পৃথিবী নত হওয়ায় অনন্ত নাগের মস্তক যেন দুর্বল হয়ে পড়ে। তীব্র আক্রমণে মানসারের সৈন্যবাহিনী রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই ভয়াবহ যুদ্ধে রথচক্রের ঘর্ষণ, সেনাদের মধ্যে অস্ত্রের লড়াই ও হাতাহাতিতে উভয়পক্ষের বহুসেনা নিহত হয়- তিয়োমধ্যে শস্ত্রাশক্তি হস্তাহস্তি পরস্পরাহিত সৈন্যং জনামজনি।”
মগধরাজ ও মালবরাজের যুদ্ধের পরিণতি
শেষপর্যন্ত রাজহংসের প্রবল পরাক্রমে মানসার পরাজিত হলে তার দর্পচূর্ণ হয়। তাকে জীবন্ত অবস্থায় বন্দি করা হয়। কিন্তু রাজহংস মানসারকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে মুক্তি দিয়ে স্বরাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।
মূল্যায়ন
প্রকৃত বীর রাজহংস দর্পাভিমানীর উচ্চতা চূর্ণ করে ক্ষমাপ্রদর্শনের মাধ্যমে মহত্ত্বের পরিচয় রাখেন।