একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত গদ্যাংশ দশকুমারচরিতম্ বাংলা অনুবাদ (higher Secondry Class – xi) পাঠ্যটির মূলপাঠ, শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ নিচে দেওয়া হল।
সংস্কৃত গদ্যাংশ দশকুমারচরিতম্ বাংলা অনুবাদ
উচ্চারণঃ ব্রহ্মাণ্ডচ্ছত্রদণ্ডঃ শতধৃতিভবনাম্ভোরুহো নালদণ্ডঃ
ক্ষোণীনৌকূপদণ্ডঃ ক্ষরদমরসরিতপট্টিকাকেতুদণ্ডঃ।
জ্যোতিশ্চক্রাক্ষদণ্ডস্ত্রিভুবনবিজয়স্তম্ভদণ্ডোহঙ্ঘ্রিদণ্ডঃ
শ্রেয়স্ত্রৈবিক্রমস্তে বিতরতু বিবুধদ্বেষিণাং কালদণ্ডঃ ।।
গদ্যরূপঃ ব্রহ্মাণ্ডঃ ছত্রদণ্ডঃ শতধৃতিভবনঃ অম্ভোরুহঃ নালদণ্ডঃ
ক্ষোণীনৌকূপদণ্ডঃ ক্ষরদ-অমর-সরিতপট্টিকা-কেতুদণ্ডঃ।
জ্যোতিঃ চক্রঃ অক্ষদণ্ডঃ ত্রিভুবন-বিজয়-স্তম্ভদণ্ডঃ অঙ্ঘ্রিদণ্ডঃ
শ্রেয়ঃ ত্রৈবিক্রমঃ তে বিতরতু বিবুধদ্বেষিণাং কালদণ্ডঃ ।।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ ব্রহ্মাণ্ডঃ ছত্রদণ্ডঃ (ব্রহ্মাণ্ডরূপ ছত্রদণ্ড) শতধৃতিভবনঃ (সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার বাসস্থান) অম্ভোরুহঃ (জল থেকে উত্থিত বা নাভিপদ্মের) নালদণ্ডঃ (মৃণাল দণ্ড) ক্ষোণীনৌকূপদণ্ডঃ (পৃথিবীরূপ নৌকার মাস্তুলদন্ড) ক্ষরদ-অমর-সরিতপট্টিকা-কেতুদণ্ডঃ (স্বর্গীয় মন্দাকিনী নদীতে পতাকার দণ্ডস্বরূপ) জ্যোতিঃ চক্রঃ অক্ষদণ্ডঃ (নক্ষত্রমণ্ডলের অক্ষদন্ডস্বরূপ) ত্রিভুবন-বিজয়-স্তম্ভদণ্ডঃ (ত্রিভুবন বিজয়ের স্তম্ভদণ্ডঃস্বরূপ) অঙ্ঘ্রিদণ্ডঃ (পাদদণ্ড) শ্রেয়ঃ (মঙ্গল) ত্রৈবিক্রম (ত্রিবিক্রম বিষ্ণুর) তে (তোমার) বিতরভূ (বিতরণ করুক) বিবুধদ্বেষিণাং (দেবতার শত্রুদের) কালদণ্ডঃ (মৃত্যুদণ্ড)।
বঙ্গানুবাদঃ ব্রহ্মাণ্ডরূপ ছত্রদন্ড, ব্রহ্মার বাসস্থান নাভিপদ্মের মৃণাল দণ্ড, পৃথিবীরূপ নৌকার মাস্তুল দণ্ড, প্রবাহিত স্বর্গীয় নদীতে পতাকার দন্ড, নক্ষত্রমণ্ডলের অক্ষদও, ত্রিভুবন বিজয়ের স্তম্ভণ্ড, দেবতার শত্রুদের যমদণ্ডস্বরূপ ত্রিবিক্রম বিষ্ণুর পানিও তোমার মঙ্গল বিতরণ করুক।
উচ্চারণঃ অস্তি সমস্তনগরীনিকষায়মাণা শশ্বদগণ্যপণ্যবিস্তারিতমণিগণাদিবস্তুজাতব্যাখ্যাতরত্নাকরমাহাত্ম্যা মগধদেশশেখরীভূতা পুষ্পপুরী নাম নগরী। তত্র বীরভটপটলোত্তরতুরঙ্গকুঞ্জরমকরভীষণসকলরিপুগণকটকজলনিধিমথনমন্দরায়মাণসমুদ্দগুভুজদণ্ডঃ পুরংদর পুরাংগণবনবিহরণ পরায়ণগীর্বাণতরুণগণিকাগণজেগীয়মানয়াতিমানয়া শরদিন্দুকুন্দঘনসারনীহারহারমৃণালমরালসুর- গজনীরক্ষীরগিরিশাট্টহাসকৈলাসকাশমূর্ত্যা রচিত দিগম্ভরালপূর্ব্যাকীর্ত্যাভিতঃ, সুরভিতঃ, স্বলোকশিখরোরুচিররত্নরত্নাকর- বেলামেখলায়িতধরণীরমণীসৌভাগ্যভোগভাগ্যবান্, অনবরতযাগদক্ষিণারক্ষিতশিষ্টবিশিষ্টবিদ্যা সংভারভাসুরভূসুরনিকরঃ, বিরচিতারাতিসংতাপেন প্রতাপেন সতততুলিতবিয়ন্ধ্যহংসঃ রাজহংসো নাম ঘনদর্পকন্দপসসৌন্দর্যহদানিরবদ্যরূপো ভূপো বভূব। তস্য বসুমতী নাম সুমতী লীলাবতী কুলশেখররমণী রমণী বভূব।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ অস্তি (আছে) সমস্ত-নগরী-নিকষায়মাণা (সমস্ত নগরীর মধ্য আদর্শস্থানীয়) শশ্বৎ (সর্বদা) অগণ্য-পণ্য বিস্তারিত-মণি-গণাদি (অসংখ্য বস্তু সজ্জিত মণিসমূহ প্রভৃতি) বস্তুজাত-ব্যাখ্যাত (উৎপাদক হিসাবে প্রসিদ্ধ) রত্নাকর মাহাত্ম্যা (রত্নাকর সমুদ্রের মহিমাযুক্ত) মগধ-দেশ-শেখরীভূতা (মগধ দেশের শীর্ষ হিসাবে বিবেচিত) পুষ্পপুরী নাম (পুষ্পপুরী নামে) নগরী (নগরী)। তত্র (সেখানে) বীরভট-পটল-উত্তরঙ্গ-তুরঙ্গ-কুঞ্জর-মকরভীষণঃ (বীর সেনাদলের মতো উত্থিত তরঙ্গ, ঘোড়া, হাতি, কুমির প্রভৃতির মতো ভয়ংকর) সকল-রিপুগণ-কটক (সকল শত্রুদের সৈন্যবাহিনী) জলনিধি-মথন (সমুদ্র মন্থন করতেন) মন্দরায়মাণ (মন্দর পর্বতের মতো) সমুদ্দণ্ডঃ (দৃঢ়) ভুজদণ্ডঃ (বাহু), পুরংদর পুরাংগণঃ বনবিহরণ পরায়ণঃ (ইন্দ্রপুরীতে অবস্থিত উদ্যানে ভ্রমণকালে) গীর্বাণঃ তরুণ- ‘গণিকাগণ জেগীয়মানয়া অতিমানয়া (স্বর্গের যুবতি অপ্সরাগণ অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে গান গেয়ে প্রকাশ করতেন) শরদিন্দু (শরতের চন্দ্র) কুন্দ ঘনসার নীহারহারঃ (কুন্দ ফুল, কর্পূর, শিশির) মৃণাল (পদ্মের ডাঁটা) মরাল (রাজহংস) সুরগজনীরক্ষীর (ঐরাবত, জল, দুধ) গিরিশ অট্টহাসঃ (মহাদেবের অট্টহাসি) কৈলাসকাশ মূর্ত্যা (কৈলাসের কাশমূর্তির দ্বারা) রচিত দিগন্তরাল-পুৰ্তা (দিগন্তব্যাপী) কীৰ্তাভিতঃ (কীর্তির দ্বারা সম্মুখবর্তী), সুরভিতঃ (সুগন্ধযুক্ত), স্বলোকশিখর (দেবতাদের মুকুটে) ঊরু-রুচির রত্ন (স্থূল সুন্দর রত্নের) রত্নাকর বেলা মেখলায়িতঃ (সমুদ্রের বেলাভূমির মেখলাসদৃশ) ধরণী-রমণী-সৌভাগ্য-ভোগ-ভাগ্যবান্ (পৃথিবীরূপা নারীর সৌভাগ্য ভোগে ভাগ্যবান), অনবরত যাগ-দক্ষিণা-রক্ষিত-শিষ্ট-বিশিষ্টঃ (অনবরত যজ্ঞের দক্ষিণা দ্বারা পালন করতেন শাস্ত্রজ্ঞ ও বিদ্বানদের) বিদ্যা-সংভার ভাসুর ভুসুর -নিকরঃ, (যশস্বী ব্রাক্ষ্মণ সকল) বিরচিত-অরাতি-সংতাপেন প্রতাপেন (অত্যন্ত প্রতাপের দ্বারা শত্রুদের সপ্তপ্ত করতেন) সতত তুলিত- বিয়ন-মধ্যহৎসঃ (সবসময় আকাশের মধ্যবর্তী সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হত) রাজহংসঃ নাম (রাজহংস নামে) ঘনদর্প (দর্পযুক্ত) কন্দৰ্প সৌন্দর্যহুদ্য-নিরবদ্যরূপঃ (কামদেবের সমান সৌন্দর্য ও সকলের প্রিয়) ভূপঃ (রাজা) বভূব (ছিলেন)। তস্য (তাঁর) বসুমতী নাম (বসুমতী নামে) সুমতী (সুবুদ্ধি) লীলাবতী (লীলাময়ী) কুল-শেখর রমণী (নারীকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠা) রমণী (পত্নী) বভূব (ছিল)।
বঙ্গানুবাদঃ সমস্ত নগরীর মধ্যে আদর্শস্থানীয়, অসংখ্য বিপণিতে বিক্রির জন্য সুসজ্জিত অগণিত বস্তুসমূহের মধ্যে মণি প্রভৃতি রত্নরাশির উৎপাদক হিসাবে প্রসিদ্ধ সমুদ্রের মহিমাযুক্ত মগধদেশের রাজধানী পুষ্পপুরী নামে একটি নগরী ছিল। সেখানে বীর সেনাদলের মতো উত্থিত তরঙ্গযুক্ত, ঘোড়া, হাতি, কুমির প্রভৃতির মতো ভয়ংকর শত্রুপক্ষের সৈন্যবাহিনীকে মন্দার পর্বতের মতো বাহু দ্বারা (এক রাজা) মন্থন করতেন। ইন্দ্রপুরীতে অবস্থিত উদ্যানে ভ্রমণকালে স্বর্গের যুবতি অপ্সরাগণ অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে গান গেয়ে তাঁর কাহিনি প্রকাশ করতেন। তাঁর দিগন্তব্যাপী কীর্তির শুভ্রতা শরতের চন্দ্র, কুন্দফুল, কর্পূর, শিশির, মৃণাল, রাজহাঁস, ঐরাবত, জল, দুধ, শিবের অট্টহাসির মতো কাশফুলের সঙ্গে তুলনীয়। তিনি ছিলেন সমুদ্রমেখলা পৃথিবীর অধীশ্বর। এই সমুদ্রের রত্নই সমুদ্রের দেবতারা মুকুটে ধারণ করতেন। তিনি অনবরত যজ্ঞানুষ্ঠানের দক্ষিণা দ্বারা শাস্ত্রজ্ঞ, গুণবান, বিদ্বান, যশস্বী ব্রাহ্মণদের পালন করতেন। প্রতাপের দ্বারা শত্রুদের সম্ভপ্ত করতেন। সবসময় আকাশের সূর্যের সঙ্গে তাঁকে তুলনা করা হত, সৌন্দর্যে কামদেবের তুল্য ও সকলের প্রিয় সেই রাজহংস ছিলেন সেখানকার রাজা। তাঁর বসুমতী নামে শুভবুদ্ধিসম্পন্না, লীলাময়ী, নারীকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠা এক পত্নী ছিল।
উচ্চারণঃ তস্য রাজ্ঞঃ পরমবিধেয়া ধর্মপালপদ্মোদ্ভবসিতবর্মনামধেয়া অমাত্যাস্ত্রয়োহভুবন্। তেষাং সিতবর্মণঃ সুমতিসত্যবর্মাণৌ, ধর্মপালস্য সুমন্ত্র সুমিত্রকামপালাঃ, পদ্মোদ্ভবস্য সুশ্রুতরত্নোদ্ভবাবিতি তনয়াঃ সমভুবন্।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ তস্য (সেই) রাজ্ঞঃ (রাজার) পরম বিধেয়াঃ (অত্যন্ত অভিজ্ঞ) ধর্মপাল পদ্মোদ্ভব সিতবর্ম নামধেয়াঃ (ধর্মপাল, পদ্মোদ্ভব ও সিতবর্ম নামে) অমাত্যাঃ এয়ঃ অভুবন্ (তিনজন মন্ত্রী ছিলেন)। তেষাম্ (তাদের মধ্যে) সিতবর্মণঃ (সিতবর্মার) সুমতিসত্যবর্মানৌ (সুমতি ও সত্যবর্মা নামে), ধর্মপালস্য (ধর্মপালের) সুমন্ত্র সুমিত্রকামপালাঃ (সুমন্ত্র, সুমিত্র ও কামপাল নামে), পদ্মোদ্ভবস্য (পদ্মোদ্ভবের) সুশ্রুত রত্নোদ্ভবৌ ইতি (সুশ্রুত ও রত্নোদ্ভব নামে) তনয়াঃ (পুত্রগণ) সমভুবন্ (ছিল)
বঙ্গানুবাদঃ সেই রাজার অত্যন্ত অভিজ্ঞ ধর্মপাল, পদ্মোভব ও সিতবর্মা নামে তিনজন মন্ত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সিতবর্মার সুমতি ও সত্যবর্মা, ধর্মপালের সুমন্ত্র, সুমিত্র ও কামপাল, পদ্মোদ্ভবের সুশ্রুত ও রত্নোদ্ভব নামে পুত্র ছিল।
উচ্চারণঃ তেষু ধর্মশীলঃ সত্যবর্মা সংসারসারতাং বুদ্ধা তীর্থযাত্রাভিলাষী দেশান্তরমগমৎ। বিটনটবারনারীপরায়ণো দুর্বিনীতঃ কামপালো জনকাগ্রজন্মনোঃ শাসনমতিক্রম্য ভুবং বভ্রাম। রত্নোদ্ভবোঽপি বাণিজ্যনিপুণতয়া পারাবারতরণমকরোৎ। ইতরে মন্ত্রিসূনবঃ পুরুন্দরপুরাতিথিষু পিতৃষু যথাপূর্বমন্বতিষ্ঠন্।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ তেষু (তাদের মধ্যে) ধর্মশীলঃ (ধার্মিক) সত্যবর্মা (সত্যবর্মা) সংসারসারতাম্ (সংসারের অসারতাকে) বুদ্ধা (বুঝে) তীর্থযাত্রা-অভিলাষী (তীর্থযাত্রা ইচ্ছাকারী) দেশান্তরম্ (অন্য দেশে) অগমৎ (গেলেন)। বিটনটবারনারীপরায়ণঃ (দুষ্ট, নট এবং গণিকাতে আসক্ত হয়ে) দুর্বিনীতঃ (উদ্ধৃত) কামপালঃ (কামপাল) জনকাগ্রজন্মোঃ (পিতার এবং দাদার) শাসনম্ (আদেশ) অতিক্রম্য (অগ্রাহ্য করে) ভুবম্ (পৃথিবীতে) বভ্রাম (ভ্রমণ করলেন)। রত্নোদ্ভবঃ অপি (রত্নোদ্ভবও) বাণিজ্য-নিপুণতয়া (ব্যাবসাতে দক্ষ হওয়ায়) পারাবারতরণম্ অকরোৎ (সমুদ্রযাত্রা করলেন) ইতরে (অন্যান্য) মন্ত্রিসূনবঃ (মন্ত্রীপুত্রেরা) পুরন্দরপুরাতিথিযু (পিতারা স্বর্গলোকে অতিথি হলে পর) যথাপূর্বম্ (আগের মতোই) অন্বতিষ্ঠন্ (অবস্থান করলেন)।
বঙ্গানুবাদঃ তাঁদের মধ্যে ধার্মিক সত্যবর্মা সংসারের অসারতাকে বুঝতে পেরে তীর্থযাত্রায় ইচ্ছুক হয়ে দেশান্তরে গেলেন। দুষ্ট, নট ও গণিকাতে আসক্ত হয়ে উদ্ধৃত কামপাল পিতা ও দাদার আদেশকে অগ্রাহ্য করে পৃথিবী ভ্রমণ করতে লাগলেন। রত্নোদ্ভব ব্যাবসাতে দক্ষ হওয়ায় সমুদ্রযাত্রা করলেন। অন্যান্য মন্ত্রীপুত্রেরা পিতাদের স্বর্গলাভের পর আগের মতোই অবস্থান করলেন, অর্থাৎ মন্ত্রীপদে আসীন হলেন।
উচ্চারণঃ ততঃ কদাচিন্নানাবিধমহদায়ুধনৈপুণ্যরচিতাগণ্যজন্যরাজন্যমৌলিপালিনিহিতসায়কো মগধনায়কো মালবেশ্বরং প্রত্যপ্রসংগ্রামঘস্মরং সমুৎকটমানসারং মানসারং প্রতি সহেলনাক্কৃতজলধিনির্ঘোষাহংকারেণ ভেরীঝংকারেণ হঠিকাকর্ণনাক্রান্তভয় চণ্ডিমানং দিগ্দন্তাবলবলয়ং বিঘূর্ণয়ন্নিজভরনমন্মেদিনীভরেণায়স্তভুজগরাজমস্তকবলেন চতুরঙ্গশ্চলেন সংযুতঃ সংগ্রামাভিলাষেণ রোষেণ মহতাবিষ্টো নির্যযৌ।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ ততঃ (তারপর) কদাচিৎ (কোনো এক সময়) নানাবিধ (বিভিন্নপ্রকার) মহৎ (শ্রেষ্ঠ) আয়ুধ (অস্ত্রশস্ত্র) নৈপুণ্য (নিপুণতায়) রচিত (রচিত) অগণ্য (অসংখ্য) জন্য-রাজন্য-মৌলি-পালি-নিহিত- সায়কঃ (রাজাদের মুকুটের প্রান্তদেশে অস্ত্র স্থাপন করে) মগধ-নায়কঃ (মগধের রাজা) মালবেশ্বরম্ (মালবের রাজাকে) প্রত্যগ্রসংগ্রামঘস্মরম্ (উপযুক্ত প্রতিযোদ্ধা বিবেচনা করে) সমুৎকট-মানসারম্ (তার সম্মানকে উৎকট ভেবে) মানসারং প্রতি (মানসারের প্রতি) সহেলনাৎ (অবহেলাবশত) কৃত-জলধি-নির্ঘোষ অহংকারেণ (সমুদ্র গর্জনের মতো অহংকারের দ্বারা) ভেরী-ঝংকারেণ (ভেরি ঝংকার দ্বারা) হঠিকাকর্ণনা-আক্রান্ত-ভয়-চণ্ডিমানম্ (যেন ভয়ে ব্যাকুল) দিগ্দস্তাবল-বলয়ম্ (দিক্হস্তীসদৃশ) বিঘূর্ণন্ (দুর্বল হয়ে ঘুরত) নিজভরণমন্ মেদিনীভরেণ (সৈন্যদের পদভারে পৃথিবী) আয়স্তভুজগরাজমস্তক বলেন (নত হওয়ায় সর্পরাজের মাথা যেন) চতুরঙ্গঃচলেন (চারপ্রকার বাহিনী দ্বারা) সংযুতঃ (সংযুক্ত হয়ে) সংগ্রামঅভিলাষেণ (যুদ্ধের ইচ্ছায়) রোষেণ (ক্রোধবশে) মহতা (খুব) আবিষ্টঃ (আবিষ্ট হয়ে) নির্যযৌ (গমন করলেন)।
বঙ্গানুবাদঃ তারপর কোনো-এক সময় মগধরাজ বিভিন্নরকমের শ্রেষ্ঠ অস্ত্র নৈপুণ্যে অসংখ্য বিপক্ষ রাজার মুকুটের প্রান্তদেশে অস্ত্র স্থাপন করেছিলেন অর্থাৎ তাঁদেরকে পরাজিত করেছিলেন। মালবরাজকে উপযুক্ত প্রতিযোদ্ধা বিবেচনা করে এবং তাঁর সম্মানকে উৎকট ভেবে অতি রোষে আবিষ্ট হয়ে মানসারের বিরুদ্ধে তিনি চতুরঙ্গ সেনাসহ যুদ্ধযাত্রা করলেন। তাঁর ভেরির শব্দে সমুদ্রের শব্দ শোনা যেত না। দিক্হস্তীরাও ভয়ে ব্যাকুল হয়ে পড়ত। সৈন্যদের পদভারে পৃথিবী নত হওয়ায় নাগরাজের মাথা দুর্বল হয়ে ঘুরতে থাকত।
উচ্চারণঃ মালবনাথোহপ্যনেকানেকপযূথসনাথো বিগ্রহঃ সবিগ্রহ ইব সাগ্রহোঽভিমুখীভূয় ভূয়ো নির্জগাম। তয়োমধ্যে শস্ত্রাশস্ত্রি হস্তাহস্তি পরস্পরাভিহতসৈন্যং জন্যমজনি। তত্র মগধরাজঃ প্রক্ষীণসকলসৈন্যমণ্ডলং মালবরাজং জীবগ্রাহমভিগৃহ্য কৃপালুতয়া পুনরপি স্বরাজ্যে প্রতিষ্ঠাপয়ামাস।
সন্ধিবিহীন পাঠ ও শব্দার্থঃ মালবনাথঃ অপি (মালবরাজও) অনেক-অনেকপ-যূথ-সনাথঃ (বহু হাতির দলসহ) বিগ্রহঃ (যুদ্ধে) সবিগ্রহঃ ইব (স্বয়ং মূর্তিমান) সাগ্রহঃ অভিমুখীভূয় ভূয়ঃ নিগাম (আগ্রহের সঙ্গে অভিমুখে বেরিয়ে পড়লেন)। তয়োঃ মধ্যে (তাদের দুই পক্ষের মধ্যে) শস্ত্রাশস্ত্রি (অস্ত্রে অস্ত্রে যুদ্ধ) হস্তাহস্তি (হাতে হাতে যুদ্ধ) পরস্পরাভিহত সৈন্যম্ (পরস্পরের সৈন্য হত্যা) জন্যম্ অজনি (যুদ্ধ হয়েছিল)। তত্র (সেখানে) মগধরাজ (মগধরাজ) প্রক্ষীণ-সকল-সৈন্য-মণ্ডলম্ (সকল সৈন্য হ্রাস পেতে থাকলে) মালবরাজম্ (মালবরাজকে) জীবগ্রাহম্ অভিগৃহ্য (জীবন্ত গ্রহণ করে অর্থাৎ বন্দি করে) কৃপালুতয়া (দয়া করে) পুনঃ অপি (পুনরায়) স্বরাজ্যে (নিজের রাজ্যে) প্রতিষ্ঠা পয়ামাস (প্রতিষ্ঠা করলেন)।
বঙ্গানুবাদঃ মালবরাজও বহু হাতির দল নিয়ে যুদ্ধে স্বয়ং উৎসাহী হয়ে অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ করতে লাগলেন। তাঁদের দুজনের মধ্যে পরস্পর অস্ত্রাঘাত ও হাতাহাতির ফলে ভয়ংকর যুদ্ধে বহু সৈন্য হতাহত হল। যুদ্ধে মালবরাজের সব সৈন্য হ্রাস পাওয়ায় মগধরাজ তাকে বন্দি করে ফেললেন, কিন্তু সদয় হয়ে আবার তাঁকে স্বরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করলেন।