একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত গদ্যাংশ দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশ থেকে পুষ্পপুরী নগরীর বর্ণনা বর্ণনা করা হল।
পুষ্পপুরী নগরীর বর্ণনা
প্রশ্ন:- দশকুমারচরিতম্ কাব্যের অন্তর্গত পুষ্পপুরী নগরীর বর্ণনা দাও।
উত্তর:- আচার্য দণ্ডী রচিত দশকুমারচরিতম্ কাব্যের পূর্ব পীঠিকার প্রথম উচ্ছ্বাসে পুষ্পপুরি নগরীর একটি সুন্দর বর্ণনা রয়েছে।কথাশিল্পী দণ্ডী তার বর্ণনা শক্তির অসাধারণ নৈপুণ্যে পুষ্পপুরি নগরীর বর্ণনায় সুন্দর চিত্র অঙ্কন করেছেন।
শক্তিশালী মগধ রাজ্যের রাজধানী পুষ্পপুরী নগরী। কবি প্রথমে পুষ্পপুরী নগরীকে সমস্ত নগরীর মধ্যে আদর্শ স্থানীয় বলে বর্ণনা করেছেন। কবির ভাষায় -“সমস্ত নগরী নিকষায়া মানা’। কবি যেন বিশ্বের সমস্ত নগরগুলোকে কষ্টিপাথরে যাচাই করে পুষ্পপুরী নগরীকে শ্রেষ্ঠত্ব বলে প্রতিপাদন করেছেন।
ধনে জনে পরিপূর্ণ এই নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য ও সুসজ্জিত সমৃদ্ধি দোকান ছিল। সেখানে সাজানো থাকত অগণিত রত্নসমূহ। সেই রত্নসমূহ সমুদ্রের মতো নগরীর প্রকাশ করত।
পুষ্পপুরী নগরী সর্বদাই বীরযোদ্ধা সেনারা রক্ষিত ছিল। চতুরঙ্গ বাহিনী ছিল এই নগরীর গর্বের বিষয়। শত্রুপক্ষ মগধরাজ্যকে আক্রমণ করার সাহস পেত না।
মহানায়ক রাজহংস ছিল পুষ্পপুরী নগরীর রক্ষাকর্তা। মধ্যাহ্ন সূর্যের মতো দীপ্যমান। মন্দার পর্বত এর মতো বাহুবিশিষ্ট রাজার ভয়ে শত্রুপক্ষ ভীত থাকতো। এই নগরীর প্রজারা কোন বিদ্রোহ করতো না। নগরীতে সর্বদা শান্তি বিরাজ করত। আর রাজা ও নগরীর কীর্তি মর্তলোক এর সীমা ছাড়িয়ে স্বর্গলোকে পাড়ি দিয়েছিল। স্বর্গের অপ্সরা উদ্যানে ভ্রমণকালে রাজা ও রাজ্যের কীর্তিকাহিনী প্রকাশ করতেন।
পুষ্পপুরী নগরী ছিল ধর্ম-কর্মের আধার, যজ্ঞানুষ্ঠানের কর্মশালা। এখানে প্রচুর যাগযজ্ঞ সম্পন্ন করা হতো। যজ্ঞেরর শেষে বিদ্বান, যশস্বী ব্রাহ্মণদের দক্ষিণা দেওয়া হত। অজস্র ব্রাহ্মণদের যাতায়াত এই নগরীকে পবিত্র দেবভূমিতে পরিণত করেছে। পুষ্পপুরী নগরী পুষ্পের ন্যায় সৌন্দর্যমন্ডিত। স্বর্গের ন্যায় শান্তিপূর্ণ। ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধিতে- এই নগরী সত্যিই যেন দেব ভূমি।